হাঁস এর খাদ্য ও পুষ্টি ব্যবস্হাপনাঃ
হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা -
গ্রামাঞ্চলে হাঁস অর্ধ আবদ্ধ পদ্ধতিতে পালন করা হয়। পুকুর খাল-বিল, নদী ইত্যাদিতে হাঁস চড়ে বেড়ায়
এবং এখান থেকেই খাদ্য সংগ্রহ করে।
অনেক খামারীগণ হাঁসকে শুধু ধানের কুঁড়া, চাল, গম এসব খেতে দেয়।
সাধারণত বর্ষা মৌসুমে সম্পুরক খাদ্য হিসেবে বাচ্চা প্রতি ৫০ গ্রাম এবং বয়স্ক গুলোকে ৬০ গ্রাম হারে
সুষম খাদ্য দিতে হবে।
শুষ্ক মৌসুমে প্রাকৃতিক খাদ্যের পর্যাপ্ততা কমে যাবার কারণে ঐ সময় খাবার পরিমাণ (৭০-৮০ গ্রাম)
বাড়িয়ে দিতে হয়। খাদ্য ব্যবস্থাপনায় এ ধরণের পরিবর্তন আনলে হাঁসের ডিম উৎপাদন বেড়ে যায়।
খাদ্য উপকরণে যে পুষ্টি উপাদান অধিক পরিমানে থাকে তাকে সে জাতীয় খাদ্য বলে। যেমন-
শর্করা জাতীয় খাদ্য ( ভুট্টা, গম, কাওন, চাউলের কুঁড়া, গমের ভুষি, ইত্যাদি)।
আমিষ জাতীয় খাদ্য ( সয়াবিন মিল, তিলখৈল, শুটকিমাছ, মিটমিল, ইত্যাদি)।
চর্বি জাতীয় খাদ্য (এনিমেল ফ্যাট , হাঁস-মুরগরি তৈল, ভেজিটেবল অয়েল, সার্কলিভার ওয়েল,
ইত্যাদি)।
ভিটমিন জাতীয় খাদ্য (শাকসব্জি ও কৃত্রিম ভিটামিন)
খনিজ জাতীয় খাদ্য (ঝিনুক , ক্যালশিয়াম ফসফেট, রকসল্ট, লবন, ইত্যাদি)।
পানিঃ দেহ কোষে শতকরা ৬০- ৭০ ভাগ পানি থাকে। তাই কোন প্রাণি খাদ্য না খেয়েও কিছু দিন
বাঁচতে পারে, কিন্তু পানি ছাড়া সামান্য কিছু দিনের বেশী বাঁচে না।
সাধারণত দেহ থেকে পানির ক্ষয় হয় মলমূত্র ও শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে ।
অপরদিকে পানি আহরিত হয় পানি পান করে, রসালো খাদ্য গ্রহণ করে এবং দেহের ভিতর
বিভিন্ন পুষ্টি উপদানের অক্সিডিশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
দেহের বেশির ভাগ অংশ পানি দ্বারা গঠিত।
ডিমের বেশির ভাগ অংশ পানি দ্বারা গঠিত।
হাঁস-মুরগির দেহে পানির কাজঃ
- খাদ্যতন্ত্রের মধ্যে খাদ্য বস্তু নরম ও পরিপাকে সাহায্য করে।
- খাদ্যতন্ত্রের মধ্যে পুষ্টি উপাদান তরল করে দেহের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিবহণ করে।
- দেহের তাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও দেহকে সতেজ রাখে।
- দেহের ভিত্তিতে দুষিত পদার্থ অপসারণ করে।
- দেহের গ্রন্থি হতে নিঃসৃত রস, হরমোন, এনজাইম এবং রক্ত গঠনে ভূমিকা রাখে।
শর্করা জাতয়ি খাদ্য আবার ২ প্রকার
দানাদারঃ সকল প্রকার দানাদার খাদ্যশস্য যেমন, ভুট্টা গম , যব, কাওন, চাউল, ইত্যাদি।
আঁশঃ সকল প্রকার দানাদার খাদ্যের উপজাত যেমন চাউলের কুঁড়া, গমের ভূষি, ভুট্টার গুটেন, কাসাভা,
ইত্যািিদ।
হাঁস-মুরগির খাদ্যের বেশীর ভাগ শর্করা পুষ্টি উপাদান যেমন দানাদার শতকরা ৪০ হতে ৬০ ভাগ এবং
উপজাত অংশ শতকরা ১০ হতে ৩০ ভাগ ব্যবহার করা হয়।
আমিষ জাতীয় খাদ্য আবার ২ (দুই) প্রকার
প্রানিজ আমিষঃ যে সমস্ত আমিষের উৎস প্রানী থেকে হয় তাকে প্রানীজ আমিষ বলে। যেমন, শুটকি মাছ ,
শুটকি মাংস মিট ও বোনমিল, ফিদার মিল, লিভার মিল, প্রোটিন কনসেনট্রেট, ইত্যাদি।
উদ্ভিদ আমিষঃ যে সমস্ত আমিষের উৎস উদ্ভিদ থেকে হয় তাকে উদ্ভিদ জাতীয় আমিষ বলে। যেমন,
সায়াবিন মিল, তিলখৈল , তৈল বীজের খৈল, তুলা বীজের খৈল, সবুজ শাকসব্জি, ইত্যাদি।
বয়সভিত্তিক হাঁসের সুষম খাদ্যে বিভিন্ন দানাদার খাদ্য উপাদান ও উক্ত উপাদানের মিশ্রনের পরিমান
নিন্মরূপঃ
বিভিন্ন বয়সের হাঁসের খাদ্য উপদান ও মিশ্রণের পরিমান
খাদ্য উপাদান (%)
|
হাঁসের বাচ্চা
০-৬ সপ্তাহ |
বাড়ন্তহাঁস
৭-১৯ সপ্তাহ |
ডিম পাড়া হাঁস
২০ সপ্তাহ তদুর্দ্ধ |
গম ভাঙ্গা | ৩৬.০০ | ৩৮.০০ | ৩৬.০০ |
ভুট্টা ভাঙ্গা | ১৮.০০ | ১৮.০০ | ১৬.০০ |
চালের কুঁড়া | ১৮.০০ | ১৭.০০ | ১৭.০০ |
সয়াবিন মিল | ২২.০০ | ২৩.০০ | ২৩.০০ |
প্রোটিন কনসেনট্রেট | ২.০০ | ২.০০ | ২.০০ |
ঝিনুক চূর্ণ | ২.০০ | ২.০০ | ৩.৫০ |
ডিসিপি | ১.২৫ | ১.২৫ | ০.৭৫ |
ভিটামিন খনিজ মিশ্রিত | ০.২৫ | ০.২৫ | ০.২৫ |
লাইসিন | ০.১০ | ০.১০ | ০.১০ |
মিথিওনিন | ০.১০ | ০.১০ | ০.১০ |
লবন | ০.৩০ | ০.৩০ | ০.৩০ |
মোট | ১০০.০০ | ১০০.০০ | ১০০.০০ |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস