Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

হাঁসের রোগসমূহ ও টিকা

হাঁসের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা -

হাঁসের দু’টি মারাত্মক রোগ হলো ডাক প্লেগ ও ডাক কলেরা রোগ। এ দু’টি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সর্ম্পকে

আলোচনা করতে হবে।

হাঁসের নিন্মরূপ বর্ণিত রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সর্ম্পকে সংক্ষিপ্ত আলোচনা -

ডাক প্লেগ

ফাউল কলেরা

ডাক প্লেগঃ

 হাঁসের ডাক প্লেগ জীবানু এক প্রকার ভাইরাস। এ রোগ অত্যন্ত ছোঁয়াচে। তাই খামারে এ রোগের প্রদুর্ভাব

ঘটলে দ্রুত সকল হাঁসে ডাক প্লেগ রোগ ছগিয়ে পড়ে। তাই হাঁস চাষ করতে হলে সকল হাঁসকে অবশ্যই

নিয়মিতভাবে এ রোগের টিকা দিতে হবে। ডাক প্লেগ রোগে আক্রান্ত হাঁসের লক্ষণঃ

 আক্রান্ত হাঁস দাঁড়াতে পারে না, খুঁড়িয়ে হাঁটে এবং সাঁতার কাটতে চায়না।

 বয়স্ক হাঁস বেশী মারা যায়।

 রোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁসের পিপাসা বেড়ে যায়।

 হাঁস পাখা মাটি৩ে ঝুলিয়ে বসে থাকে।

 হলুদ রংএর পাতলা পায়খানা হয়।

 কখনও কখনও পায়খানার সাথে রং দেখা দেয়।

 নাক দিয়ে পানি ঝরে।

ফাউল কলেরা বা হাঁসের কলেরাঃ

 হাঁসের কলেরা জীবানু এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া। এই জীবানু হাঁসের দেহে প্রবেশ করে রক্তের সাথে মিশে

এক প্রকার বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে এবং রক্ত চলাচলের সাথে মিশে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত

হাঁসের মল দ্বারা এ রোগ খাদ্য ও পানিকে দূষিত করে এবং খামারে ছড়িয়ে পড়ে। বাজার থেকে রোগাক্রান্ত

হাঁস কিনে আনলেও এ রোগ খামারে ছড়াতে পারে। সকল বয়সের হাঁস এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

কলেরা রোগে আক্রান্ত হাঁসের লক্ষণঃ

 এ রোগে আক্রান্ত হাঁস খেতে চায়না।

 পালকগুলো খসখসে হয়ে যায়, চেহারায় অবসন্নতা আসে ও রক্তশূন্য মনে হয়ে ।

 হাঁসের পিপাসা বেড়ে যায়।

 পায়খানার রং সবুজ এবং সাদা ও ফেনাযুক্ত মনে হয়।

 চলাফেরা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

 এক জায়গায় দাড়িয়ে ঝিমাতে থাকে এবং অল্প সময়ের মধ্যে মারা যায়।

হাঁসের উপরোক্ত দু’টি রোগ ছাড়াও হাঁসের খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত কারণ যেমন, আফলাটক্সিন ও বটুলিজম এর

বিষক্রিয়ায় হাঁসের মুত্যু ঘটতে দেখা যায়। তাই এ বিষয়েও আলোচনা করা যেতে পারে। আফলাটক্সিন থেকে রক্ষা

করার জন্য খাদ্য তৈরী করার সময় বিশেষ করে ভুট্টাদানা খুব ভালভাবে দেখে নিতে হবে যেন ভুট্টাদানার মুখে কাল

দাগ অর্থাৎ ছত্রাক না থাকে। খাদ্য উপাদানে এ ধরণের ভূট্টাদানা বাদ দিয়ে খাদ্য তৈরী করলে অন্ততঃ

আফলাটক্সিন সমস্যা দূর করা যেতে পারে।

হাঁসের রোগ প্রতিকার

হাঁসের রোগ প্রতিরোধে প্রথমে আমাদেরকে রোগ বিস্তারের কারণ জানতে হবে। তা হলে হাঁসের রোগ প্রতিকার

করা সহজ হবে।

রোগের বিস্তারের কারণসমূহঃ

 হাঁসের সুষম খাদ্যের অভাব।

 সীমাবদ্ধ  স্থানে নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত হাঁসের অবস্থান।

 অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান বা পরিবেশে হাঁস পালন।

 খামারে রোগ সৃষ্টিকারী অনুজীবাণু, জীবাণু, পরজীবী, ছত্রাক, ইত্যাদির আবির্ভাব।

 খামারীদের হাঁসের রোগজীবাণু বিষয়ে অসতর্কতা, অজ্ঞতা ও অনভিজ্ঞতা।

 হাঁসকে দুষিত ও ভেজা খাদ্য সরবরাহ করা।

হাঁসের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় করণীয়ঃ

 প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় হাঁসের আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।

 খাদ্য খাওয়া ও পানি পান করার পরিমানের উপর হাঁসের স্বাস্থের অবস্থা নির্ভর করে।

 ঘরে হাঁসের মৃত্যু হলে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানসহ দ্রুত মৃত হাঁসের সৎকারের ব্যবস্থা হবে।

 খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত রোগ যেমন আফলাটক্সিন ও বটুলিজম এর কারণে হাঁসের মৃত্যু ঘটতে দেখা যায়।

এ বিষয়েও সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যেতে পারে।

 খাদ্য তৈরীর সময় বিশেষ করে ভূট্টাবীজ খুব ভালোভাবে দেখে নিয়ে অন্যান্য খাদ্য উপাদানসহ খাদ্য তৈরী

করলে এ সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

 স্থানীয় ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শে খাদ্য বা পানির সাথে ঔষধ সেবনের ব্যবস্থা করতে হবে।

 খামারের জৈব নিরাপত্তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

হাঁসের রোগ প্রতিরোধে করণীয়ঃ

 খামারে হাঁসের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা করা উত্তম।

 মনে রাখতে হবে অসুস্থ হাঁস একবার সংক্রামক রোগেঅসুস্থ' হলে চিকিৎসায় সেই হাঁস আর পূর্বের মত

উৎপাদনশীল থাকে না।

 তাই হাঁসের রোগ প্রতিকার এর জন্য টিকা প্রদান কর্মসূচী হচ্ছে একমাত্র উত্তম উপায়।

 তবে হাঁসের ফাউল কলেরা রোগ প্রতিকারে  স্বাস্থ্যকর বাসস্থান ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হলে এ রোগের জন্য

টিকা প্রদানের প্রয়োজন হয় না। সাধারণত হাঁসকে কেবল ডাক প্ল্যাগ টিকা দিলে চলে।

 গবাদি প্রাণির চিকিৎসা সেবা গ্রহনের জন্য  উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে গিয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য খামারীদের উদ্বুদ্ধকরণ।

 টীকাদান কর্মসূচী নিয়মিত অনুসরণ করলে সম্পূর্ণরূপে হাঁসের উক্ত রোগের ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এসব রোগের টিকাদান পরিকল্পনা ও প্রদানের নিয়মাবলী নিম্নে প্রদান করা হলোঃ

হাঁসের রোগ প্রতিরোধক টীকাদান কর্মসূচীঃ

রোগের নাম
প্রয়োগের বয়স
প্রয়োগ পদ্ধতি
ডাক প্লেগ

প্রথম মাত্রা ২১-২৮ দিন বয়সে। দ্বিতীয় মাত্রা (বুস্টার

ডোজ ( প্রথম মাত্রার ১৫ দিন পর অর্থাৎ ৩৬-৪৩ দিন

বয়সে পরবর্তী ৪-৫ মাস পর একবার


বুকের মাংসে /

প্রয়োগ বিধিমতে


ডাক কলেরা

প্রথম মাত্রা ৪৫-৬০ দিন বয়সে ২য় মাত্রা (বুস্টার ডোজ)

১ম মাত্রার ১৫ দিন পর অর্থাৎ পরবর্তী ৬০-৭৫ দিন

বয়সে পরবর্তী প্রতি ৪-৫ মাস পরপর একবার।


ডানার তলদেশে পালক ও

শিরাহীন স্থানে চামড়ার

নীচে/ প্রয়োগ বিধিমতে।